স্বদেশ ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শীতলক্ষ্যার ওপর ছয় লেনের সেতু হবে। সরাসরি সংযোগ স্থাপিত হবে নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলার। তা ছাড়া নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুর সঙ্গে বাইপাসের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-মাওয়া-খুলনা মহাসড়কে সংযোগ স্থাপিত হবে। এমন গুরুত্বপূর্ণ সেতুর কাজ চলছে ১০ বছর। এখন আরও দুই বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি খরচও বাড়াতে হচ্ছে।
তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণে ৩ বছর সময় লাগবে- এমন কথাই বলা হয়েছিল ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তির সময়। ২০১০ সালে একনেকে অনুমোদনের পর ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এখন বলা হচ্ছে, আরও ২ বছর সময় লাগবে। আনুষঙ্গিক বিষয়াদি মিলে আড়াই বছর। ৪শ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ সেতুর মূল স্প্যান হবে ৯০ মিটারের। সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য হবে ২ দশমিক ১৩ কিলোমিটার।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ। এর মেয়াদ বাড়ানোসহ কিছু সংশোধনী আসছে। ২০১০ সালে একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটি নির্মাণকাজের শেষ সময় ধরা ছিল গত মাস ডিসেম্বর পর্যন্ত। তার আগে চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণকাজ শেষ করার কথা গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি। প্রকল্পের উন্নয়ন সহযোগী সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (এসএফডি) ঠিকাদারের অর্থ ছাড়ে বিলম্বের কারণে সময় বাড়ানো হয় ৩১৭ দিন। সে হিসাবে গত ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এখন বলা হচ্ছে, করোনার কারণে নির্মাণকাজ ব্যাহত হয়েছে। তাই গত ২২ সেপ্টেম্বর এসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো প্রকল্পের মেয়াদ আরও ৫৭৪ দিন বাড়ানোর আবেদন করে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনা করে এখন আরও ৩৬৫ দিন তথা এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। এরপর ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড হিসেবে আরও এক বছর তথা ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে পরামর্শক সেবারও সংশোধন করতে হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ বাড়ানোয় পরামর্শকের চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে হচ্ছে। প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করতে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করে এখন ডিপিপি সংশোধন করা হবে। ঠিকাদারের নির্মাণকাজের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এক বছরের পরামর্শক খাতের জন্য ৭ কোটি ৩২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। গত মাস পর্যন্ত এ প্রকল্পের অগ্রগতি ৭১.৫৬ শতাংশ। এ নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মেয়াদ বৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেয় মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করতে হলে বাড়বে ঋণচুক্তির মেয়াদও।
২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনকালে ব্যয় ধরা হয় ৩৭৭ কোটি ৬২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। পরবর্তী সময়ে ভূমি অধিগ্রহণের খরচ বৃদ্ধি, ভ্যাট ও আইটি খাতে ব্যয় সমন্বয় করতে গিয়ে ২০১৫ সালের ২৯ মে বিশেষ সংশোধনী আনে। সে অনুযায়ী ব্যয় ধরা ছিল ৫৩৯ কোটি ৬৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। এরপর ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি প্রকল্পের ডিপিপি সংশোধন হয়। সে অনুযায়ী ৫৯৯ কোটি ২৭ লাখ ৫১ হাজার টাকা ছিল সর্বশেষ প্রাক্কলিত খরচ।